ক্ষমতার অপব্যবহার করে সামরিক আইন জারি ও বিদ্রোহের অভিযোগে শেষমেশ গ্রেফতার হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির পর প্রেসিডেন্ট ভবনে অভিযান চালায় দেশটির বিশেষ পুলিশ ও তদন্ত সংস্থার প্রতিনিধিগণ।
সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, সকাল সাড়ে ১০টায় যৌথ তদন্ত কার্যালয় থেকে প্রেসিডেন্ট ইওলকে গ্রেফতারের বিষয়ে একটি ভিডিও বার্তা দেওয়া হয়। বার্তায় বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল হতে যাচ্ছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট যাকে প্রেসিডেন্ট কার্যালয় থেকে গ্রেফতার করা হবে, যেহেতু তিনি এখানো প্রেসিডেন্ট ভবনে অবস্থান করছেন।
এই ঘোষণার পর পরই বিশেষ পুলিশ ও তদন্ত প্রতিনিধিদের হাজারের অধিক সদস্যের একটি দল তাকে গ্রেফতারে প্রেসিডেন্ট ভবনে অভিযান শুরু করে। অভিযানে তারা প্রেসিডেন্সিয়াল সিকিউরিটি গার্ডের বাধার সম্মুখীন হলে বিশেষ উপায়ে ভেতরে ঢোকার ব্যবস্থা নেন। সিকিউরিটি গার্ড ও গ্রেফতার অভিযানে আসা সদস্যদের মধ্যকার ধস্তাধস্তি রক্তপাতে গড়ানোর পরিস্থিতি তৈরি হলে প্রেসিডেন্ট ইওল ভিডিও মারফত আত্মসমর্পণের ঘোষণা দেন এবং নীচে নেমে আসেন।
এছাড়া তার দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের বিশাল দলও তার গ্রেফতার আটকাতে প্রেসিডেন্ট ভবনের বাইরে অবস্থান করছিলো। প্রেসিডেন্ট কম্পাউন্ডে ছিলো আইনজীবী ও আইনপ্রণেতাদের বিশাল একটি দল। কিন্তু ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিদ্রোহের দায় যেহেতু প্রেসিডেন্টকে যাবতীয় সুবিধা ও বিশেষ আইনের বাইরে নিয়ে যায় তাই গ্রেফতার ঠেকানো এক প্রকার অসম্ভব ছিলো।
এর পূর্বে ৩ জানুয়ারিতেও তাকে গ্রেফতারে অভিযান চালায় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কর্মী, সমর্থক ও সিকিউরিটি গার্ডের বাধার মুখে গ্রেফতারে ব্যর্থ হয় অভিযানে যাওয়া সদস্যরা। প্রেসিডেন্ট কম্পাউন্ডে সেবার প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডদের সাথে সংঘর্ষ না হলেও কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত বিরাজমান থাকে দু’পক্ষের টানটান মুখোমুখি অবস্থান। পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট ইওনকে গ্রেফতার না করেই ফিরে যেতে হয়েছিলো অভিযানে যাওয়া সদস্যদের।
ইউন সুক ইওল ২০২২ এর মে মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষমতায় আসেন। ২০১৭ সালে দূর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত সাবেক প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন হেই এর দূর্নীতির বিরোধী প্রধান প্রসিকিউটর ছিলেন তিনি। যা তাকে তুমুল জনপ্রিয়তা এনে দেয়। কিন্তু সম্প্রতি ২০২৪ এর ৩ ডিসেম্বর ক্ষমতার অপব্যবহার করে সামরিক আইন জারি তাকে মুহুর্তেই জাতির কাছে খলনায়কে পরিণত করে।
সূত্র: আল জাজিরা