ইনসাফ | নাহিয়ান হাসান
ফিলিস্তিনে ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের অবৈধ ইহুদি বসতিগুলো আমেরিকার স্বার্থ রক্ষা করার ফলে ওয়াশিংটন ইসরাইলের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আর একারণেই অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনের ব্যাপারে তাদের নিরঙ্কুশ সমর্থন দিলেও ইসরাইলের রাজনৈতিক অস্থিরতায় নিজেদের জড়াবে না ওয়াশিংটন।
সোমবার (৭ জুন) আমেরিকার হোয়াইট হাউস প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
ইসরাইলের রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনে নিজেদের না জড়ানোর কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেও ফিলিস্তিনে ইসরাইলের অবৈধ বসতি স্থাপনের ব্যাপারে তাদের নিরঙ্কুশ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে বাইডেন প্রশাসন। ইসরাইলের ব্যাপারে আমেরিকার পক্ষ থেকে যে মনোভাব প্রকাশ করা হচ্ছে তা এতদিন যাবত ফিলিস্তিনের সাথে যে আচরণ করে আসা হয়েছে তার সম্পূর্ণ বিপরীত। কেননা ফিলিস্তিনে ২০০৬ সালের অবাধ ও নিরপেক্ষ আইনসভা নির্বাচনে হামাসের বিজয়ের সময় সেই নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছিল আমেরিকা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
আমেরিকার কারণে ফিলিস্তিনের গণতন্ত্রকে সেসময় অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিলো। কেননা ওই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি ও ফিলিস্তিনি গণতন্ত্রের একটি মিথ্যা আখ্যান তৈরি করতে সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়া পরশক্তিধর রাষ্ট্রটি নির্বাচনে ফিলিস্তিনি জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলনের বিরুদ্ধে গিয়ে পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াকে অস্বীকার করেছিলো।
২০০৬ সালের ফিলিস্তিন নির্বাচনে যে অভিযোগ এনে তারা ফিলিস্তিনের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করেছিলো সেই একই অভিযোগ বর্তমানে ইহুদিবাদী ইসরাইলের ঘাড়ে থাকার পরেও তারা বলছে দেশটির রাজনৈতিক তৎপরতায় ওয়াশিংটন কোনো হস্তক্ষেপ করবে না! অথচ ইহুদিবাদী ইসরাইলের রাজনীতিকরা বর্তমানে প্রকাশ্যে মার্কিন নীতির বিরোধিতা ও অবজ্ঞা প্রকাশ করে বেড়াচ্ছে! এতকিছুর পরেও আমেরিকা তাদের চেকবুক ইসরাইলের জন্য উন্মুক্ত রেখেছে বলে জানা যায়।
কারণ, সম্প্রতি দখলকৃত ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের জঘন্যতম সন্ত্রাসী হামলার পরপর নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওই সন্ত্রাসী রাষ্ট্রটির সাহায্যে সর্বপ্রথম এগিয়ে যান এবং তাদের কাছে বিক্রির জন্য ৭৩৫ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের অস্ত্র বরাদ্দ দেন।
এছাড়া ফিলিস্তিনিদের উপর বর্বরোচিত হামলার এক সপ্তাহ পর ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গ্যান্দজ নিজেদের মিসাইল প্রতিরক্ষাব্যবস্থা আয়রন ডোমের জন্য বাইডেন প্রশাসন কর্তৃক প্রতিশ্রুত অর্থ সহায়তার সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ওয়াশিংটন গিয়েছিলেন বলে জানা যায়। আয়রন ডোমের জন্য অর্থ সহায়তা দিবালোকের ন্যায় একটি সুস্পষ্ট বিষয় যা সন্ত্রাসবাদে মদদদাতা রাষ্ট্র আমেরিকা দ্বিধাহীনভাবে প্রকাশ্যে করেছিলো।
এবিষয়ে আমেরিকার ভারপ্রাপ্ত স্টেট সেক্রেটারি জোয়ে হুড বলেন, মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোমকে পুনরায় শতভাগ কর্মক্ষম করে তুলার মাধ্যমে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা সামর্থ্য বৃদ্ধিতে মার্কিন প্রশাসনের অর্থ সহযোগিতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন, যাতে তারা ভবিষ্যতে নিজেদের ‘আত্মরক্ষা’ করতে পারে।
সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর।