অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিকট বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ছয়টি প্রস্তাব পেশ করেছেন।
শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে রাষ্ট্রিয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ প্রস্তাব রাখেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে নিহতসহ সাম্প্রতি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচরের এবং ৫ মে ও এর পরবর্তী সময়ে হেফাজতে ইসলামসহ অন্যান্য দলগুলোর নেতাদের বিরুদ্ধে দেওয়া মামলাগুলো একমাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার দাবি জানিয়েছি। তারপর প্রধান উপদেষ্টা সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান। আমরা আমরা সহযোগিতা করার প্রত্যয় জানিয়েছি। নির্বাচন ও প্রশাসনসহ প্রত্যেকটা খাতের প্রয়োজনীয় সংস্কার করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন করার দাবিও জানিয়েছি।
মতবিনিময় সভায় লিখিত আকারে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে যে দাবিগুলো দলটির মহাসচিব মুহাম্মদ মামুনুল হক প্রধান উপদেষ্টা বরাবর লিখিতভাবে প্রস্তাব করেছেন তা হলো-
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিকট খেলাফত মজলিস যে প্রস্তাব রাখলেন:-
১। প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা; নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগকারীদের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা। সে জন্য আসনভিত্তিক বিজয়ী সংসদ সদস্যদের বাইরে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলসমূহের প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে সংসদে প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা করা। প্রার্থীদের নিজস্ব প্রচারণার পরিবর্তে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীদের প্রচার ও প্রকাশনার ব্যবস্থা করা। যোগ্য সৎ ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা।
২। সাংবিধানিক সংস্কার:বর্তমান সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একচ্ছত্র ক্ষমতা স্বৈরতন্ত্রের জন্ম দেয়। তাই এ ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে ভারসাম্য সৃষ্টি করা। দুই মেয়াদের বেশি একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের ব্যবস্থা বন্ধ করা। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর দলীয় পদ থেকে পদত্যাগের বিধান করা। সংসদ সদস্যদের দলীয় সিদ্ধান্তের বাহিরে ভোট দেওয়ার সুযোগ রাখা।
৩। বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করা। বিচার বিভাগে সরকারের হস্তক্ষেপ মুক্ত রাখার স্বার্থে বিচারপতি নিয়োগ ও বিয়োগের জন্য জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা।
৪। শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক বিতর্কিত বিষয়সমূহ বাদ দিয়ে ধর্মীয় ও নৈতিকতা শিক্ষা সংযোজন করা।
৫। পুলিশ ও প্রশাসনকে সরকারের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত রাখা। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাদেরকে ব্যবহারের পথ বন্ধ করা।
৬। কুরআন সুন্নাহ বিরোধী আইন/নীতি প্রনয়ণ না করা।